রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলা থেকে ঘাঘড়া সড়ক দিয়ে গেলেই চোখে পড়বে পাহাড়ের বিভিন্ন প্রান্তে উৎপাদিত বিলেতি ধনেপাতা সারি সারি করে সাজানো হচ্ছে। এই ধনেপাতা দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানোর জন্য প্রস্তুত করছেন চাষিরা। স্থানীয় বাজারসহ শহরাঞ্চলে এই ধনেপাতার ব্যাপক চাহিদা থাকায় দামও ভালো পাচ্ছেন তাঁরা। এতে ধনেপাতা চাষ করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন কাপ্তাইয়ের পাহাড়ি এলাকার প্রান্তিক চাষিরা।
ধনেপাতা চাষ করা কাপ্তাই ওয়াগ্গা ইউনিয়নের বাসিন্দা মিনিপ্রু মারমা, অংমে মারমা, সায়মং মারমাসহ কয়েকজন চাষি জানান, তাঁরা পাহাড়ে বিভিন্ন সবজির পাশাপাশি সম্প্রতি ধনেপাতা চাষ করে ভালো ফলন পাচ্ছেন। বর্তমানে পাইকারিভাবে প্রতি কেজি ধনেপাতা ৫০-৬০ টাকা ধরে বিক্রি করছেন তাঁরা। এই ধনেপাতা ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হচ্ছে। ধনেপাতা চাষ সহজ হওয়ায় অনেক নতুন চাষি এদিকে আগ্রহী হচ্ছেন বলেও জানান তাঁরা। এ ছাড়া পাহাড়ি এলাকার বিভিন্ন বাগানের নিচে এবং আনাচ-কানাচে এই পাতা চাষ করা যায়। বাম্পার ফলনও হচ্ছে। ফলে আর্থিকভাবে সচ্ছলতা অর্জন করছে অনেক পরিবার।
কাপ্তাই কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মধুসূদন দে বলেন, ‘চলতি বছর কাপ্তাইয়ের বিভিন্ন ইউনিয়নের পাহাড়ি ও সমতল এলাকায় এই বিলেতি ধনেপাতার ভালো ফলন হয়েছে। তা ছাড়া অল্প পুঁজি ও বেশি লাভ হওয়ায় ধনেপাতা চাষ করতে আগ্রহী হচ্ছেন পাহাড়ি চাষিরা। এই পাতার গন্ধ কড়া এবং দুপাশে খাঁজকাটা থাকে। একবার বীজ বুনলে কয়েক বছর পর্যন্ত গাছ বেঁচে থাকে। ফলে বারবার পাতা সংগ্রহ করা যায়। তাই বিলাতি ধনেপাতা চাষে ঝুঁকছেন এই অঞ্চলের অনেক চাষি।’
কাপ্তাই কৃষি বিভাগের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবু সালেহ জানান, তাঁর ব্লকের আওতাধীন ওয়াগ্গা এলাকায় প্রায় ৫০ একর এলাকাজুড়ে বিলেতি ধনেপাতার চাষ করা হয়েছে। প্রতিটি এলাকায় এই ধনেপাতার খুব ভালো ফলন হয়েছে। তা ছাড়া এই পাতা সম্পূর্ণ বিষমুক্ত এবং রাসায়নিক সারবিহীনভাবে উৎপাদন করা হচ্ছে। এতে একদিকে যেমন এর চাহিদা বেশি, অন্যদিকে কাপ্তাইয়ে উৎপাদিত এই ধনেপাতা স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে দেশের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে। এতে অনেক চাষিরা স্বাবলম্বী হচ্ছেন। একই সঙ্গে ধনেপাতার পাশাপাশি বিভিন্ন শাকসবজি চাষের সুযোগ থাকায় চাষিরা অনেক লাভবান হচ্ছেন বলেও জানান তিনি।
Leave a Reply