নীলফামারীর বিভিন্ন বাজারে উঠেছে শীতকালীন শাকসবজি। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার শাকসবজির দাম বেশি বলছেন ক্রেতারা। তাদের প্রশ্ন শাকসবজির দাম কেন বেশি? এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য উত্তরবঙ্গের ঐতিহ্যবাহী নাপা শাকের আঁটি (প্রায় ৫০০ গ্রাম) খুচরা বাজারে ৭০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। সবজির মধ্যে মুলার কেজি ১৫ ও বেগুন ২০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। তবে শাকসবজির ভালো দাম পেয়ে খুশি চাষিরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র জানায়, এবার জেলার ছয় উপজেলায় পাঁচ হাজার ৬৭০ হেক্টর জমিতে শাকসবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে এক হাজার ২৬৫ হেক্টর জমির ফসল পাওয়া গেছে। বাকিগুলোতে আবাদ চলমান। সেগুলোর কিছু কিছু ফসল বাজারে আসছে। গত বছর সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল পাঁচ হাজার ৫৮০ হেক্টর। চলতি মৌসুমে ৯০ হেক্টর জমিতে শাকসবজি চাষ বেশি হয়েছে। গ্রাম পর্যায়ে কিছু উঁচু জমির আগাম শাকসবজি বাজারে উঠেছে।
মঙ্গলবার (০১ নভেম্বর) সরেজমিনে জেলা শহরের কিচেন মার্কেটে ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, পেঁপে, শিম, লাল শাক, পুঁই শাক, পালং শাক, নাপা শাক, সরিষা শাক, কলমি শাক, ডাঁটা শাক, লাউশাক, ধনিয়া পাতা ও মুলার শাকসহ হরেক রকম শাকসবজি দেখা গেছে। শাকসবজির দাম কেন বেশি জানতে চাইলে জেলা শহরের কয়েকজন চাষি জানান, জ্বালানি, হাল চাষ, শ্রমিক, সার ও বীজের মূল্যবৃদ্ধির কারণে উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে। তাই পাইকারি ও খুচরা বাজারে শাকসবজির দাম বেড়েছে। সবমিলে স্থানীয় পর্যায়ে চাষিরা খরচ বাদে লাভের আশা করছেন।
জেলা শহরের কিচেন মার্কেটের সবজির আড়তদার মো. ইলিয়াস হোসেন ও রানা আহমেদ জানান, ফুলকপি এবং বাঁধাকপির কেজি ৫২-৫৫, শিম ৭০-৮০, বরবটি ৩৮-৪০, মুলা ১৩-১৫, বেগুন ১৫-১৬, মিষ্টি কুমড়া ২৫-২৬, লাউ প্রতি পিস ২০-২৫, করলা ২৮-৩০ টাকা ও পেঁপে ১০-১২ টাকা পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি লাল শাকের আঁটি ৮-১০, পালং শাকের আঁটি ৩০-৩৫, পুই শাকের আঁটি ৮-১০ ও নাপা শাকের আঁটি ৫৫-৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। তবে খুচরা বাজারে শাকসবজির দাম বেশি।
শহরের বিভিন্ন খুচরা বাজারে ফুলকপি এবং বাঁধাকপির কেজি ৬০-৭০, শিম ৮০-১০০, বরবটি ৪৫-৫০, মুলা ২০-২৫, বেগুন ২০-২৫, মিষ্টি কুমড়ার পিস ৩০-৩৫, লাউ প্রতি পিস ২৫-৩০, করলা ৪০-৪৫, পেঁপে ২০, লাল শাকের আঁটি ১০-১৫, পালং শাকের কেজি ৬০-৭০, পুঁই শাকের আঁটি ১৫-২০ টাকা এবং নাপা শাকের আঁটি ৬৫-৭০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
সদর উপজেলার ইটাখোলা ইউনিয়নের কানিয়াল খাতা গ্রামের কৃষক সুবাস চন্দ্র রায় (৫৫) বলেন, ‘বর্ষার শেষদিকে বৃষ্টি কম হওয়ায় শাকসবজির উৎপাদন ভালো হয়েছে। বাড়ির জৈব সার দিয়ে চাষ করায় ফসলে তেমন পোকার আক্রমণ হয়নি। কিছুদিন আগে ঝড়বৃষ্টি হওয়ার কথা শুনে মনটা খারাপ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু জেলায় ঝড়বৃষ্টি হয়নি। এখন একটু বৃষ্টি হলে ভালো হতো। পাইকারি বাজারে নাপা শাকের আঁটি ৬০ টাকা বিক্রি করছি।এমন দাম থাকলে গত বছরের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবো।’
একই গ্রামের কৃষক মকছেদ আলী (৪৫) বলেন, ‘আমার এক বিঘা জমিতে নাপা শাক, ধনিয়া পাতা এবং পালং শাক আবাদ করেছি। ভালো ফলন হয়েছে। পালং শাকের কেজি ও নাপা শাকের আঁটি ৬০ টাকা এবং লাল শাকের আঁটি ১০ টাকা দরে বিক্রি করছি। এই দাম থাকলে খরচ বাদ দিয়ে লাভবান হবো।’
শাকসবজির দাম বেশির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘হাল চাষ, শ্রমিক, সার ও বীজের মূল্যবৃদ্ধির কারণে উৎপাদন খরচ বেড়েছে। সেইসঙ্গে সবকিছুর দামই এখন বেশি। কম দামে বিক্রি করলে আমাদের লোকসান গুনতে হবে।’
কিচেন মার্কেটে বাজার করতে আসা শহরের উকিলের মোড় মহল্লার শাহেদা বেগম বলেন, ‘শীতের শুরুতে বাজারে প্রচুর শাকসবজি উঠেছে। কিন্তু দাম অনেক বেশি। দিন আনে দিন খাওয়া মানুষের শাকসবজি কেনা মুশকিল। তবু বেশি দাম দিয়ে পালং শাক, ধনিয়া পাতা ও ফুলকপি কিনলাম।’
একই বাজারের খুচরা সবজি বিক্রেতা ইলিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘নতুন সবজি হিসেবে পাইকারি বাজারে দাম একটু বেশি। আরও কয়েকদিন এই দাম থাকবে। সরবরাহ বাড়লে দাম কমে যাবে।’
সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আতিক আহমেদ বলেন, ‘উপজেলায় এবার এক হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে শাকসবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে আগাম শাকসবজি বাজারে উঠেছে। এসব শাকসবজির দাম চড়া। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় শাকসবজিতে রোগ-বালাই কম। কৃষক-চাষিরা ভালো দাম পেলে শাকসবজি চাষে আগ্রহী হবেন।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা হুমায়রা মন্ডল বলেন, ‘কৃষকরা বাড়তি দামের আশায় উঁচু জমিতে আগাম শাকসবজি চাষ করেন। আগাম সেসব শাকসবজি বাজারে উঠেছে। এজন্য দাম একটু বেশি। ভালো দাম পেয়ে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। আশা করছি, বাজারে সরবরাহ বাড়লে দাম কমে যাবে।’
নাপা শাকের আঁটি ৭০ টাকা
নীলফামারীর বিভিন্ন বাজারে উঠেছে শীতকালীন শাকসবজি। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার শাকসবজির দাম বেশি বলছেন ক্রেতারা। তাদের প্রশ্ন শাকসবজির দাম কেন বেশি? এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য উত্তরবঙ্গের ঐতিহ্যবাহী নাপা শাকের আঁটি (প্রায় ৫০০ গ্রাম) খুচরা বাজারে ৭০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। সবজির মধ্যে মুলার কেজি ১৫ ও বেগুন ২০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। তবে শাকসবজির ভালো দাম পেয়ে খুশি চাষিরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র জানায়, এবার জেলার ছয় উপজেলায় পাঁচ হাজার ৬৭০ হেক্টর জমিতে শাকসবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে এক হাজার ২৬৫ হেক্টর জমির ফসল পাওয়া গেছে। বাকিগুলোতে আবাদ চলমান। সেগুলোর কিছু কিছু ফসল বাজারে আসছে। গত বছর সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল পাঁচ হাজার ৫৮০ হেক্টর। চলতি মৌসুমে ৯০ হেক্টর জমিতে শাকসবজি চাষ বেশি হয়েছে। গ্রাম পর্যায়ে কিছু উঁচু জমির আগাম শাকসবজি বাজারে উঠেছে।
মঙ্গলবার (০১ নভেম্বর) সরেজমিনে জেলা শহরের কিচেন মার্কেটে ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, পেঁপে, শিম, লাল শাক, পুঁই শাক, পালং শাক, নাপা শাক, সরিষা শাক, কলমি শাক, ডাঁটা শাক, লাউশাক, ধনিয়া পাতা ও মুলার শাকসহ হরেক রকম শাকসবজি দেখা গেছে। শাকসবজির দাম কেন বেশি জানতে চাইলে জেলা শহরের কয়েকজন চাষি জানান, জ্বালানি, হাল চাষ, শ্রমিক, সার ও বীজের মূল্যবৃদ্ধির কারণে উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে। তাই পাইকারি ও খুচরা বাজারে শাকসবজির দাম বেড়েছে। সবমিলে স্থানীয় পর্যায়ে চাষিরা খরচ বাদে লাভের আশা করছেন।
জেলা শহরের কিচেন মার্কেটের সবজির আড়তদার মো. ইলিয়াস হোসেন ও রানা আহমেদ জানান, ফুলকপি এবং বাঁধাকপির কেজি ৫২-৫৫, শিম ৭০-৮০, বরবটি ৩৮-৪০, মুলা ১৩-১৫, বেগুন ১৫-১৬, মিষ্টি কুমড়া ২৫-২৬, লাউ প্রতি পিস ২০-২৫, করলা ২৮-৩০ টাকা ও পেঁপে ১০-১২ টাকা পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি লাল শাকের আঁটি ৮-১০, পালং শাকের আঁটি ৩০-৩৫, পুই শাকের আঁটি ৮-১০ ও নাপা শাকের আঁটি ৫৫-৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। তবে খুচরা বাজারে শাকসবজির দাম বেশি।
শহরের বিভিন্ন খুচরা বাজারে ফুলকপি এবং বাঁধাকপির কেজি ৬০-৭০, শিম ৮০-১০০, বরবটি ৪৫-৫০, মুলা ২০-২৫, বেগুন ২০-২৫, মিষ্টি কুমড়ার পিস ৩০-৩৫, লাউ প্রতি পিস ২৫-৩০, করলা ৪০-৪৫, পেঁপে ২০, লাল শাকের আঁটি ১০-১৫, পালং শাকের কেজি ৬০-৭০, পুঁই শাকের আঁটি ১৫-২০ টাকা এবং নাপা শাকের আঁটি ৬৫-৭০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
সদর উপজেলার ইটাখোলা ইউনিয়নের কানিয়াল খাতা গ্রামের কৃষক সুবাস চন্দ্র রায় (৫৫) বলেন, ‘বর্ষার শেষদিকে বৃষ্টি কম হওয়ায় শাকসবজির উৎপাদন ভালো হয়েছে। বাড়ির জৈব সার দিয়ে চাষ করায় ফসলে তেমন পোকার আক্রমণ হয়নি। কিছুদিন আগে ঝড়বৃষ্টি হওয়ার কথা শুনে মনটা খারাপ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু জেলায় ঝড়বৃষ্টি হয়নি। এখন একটু বৃষ্টি হলে ভালো হতো। পাইকারি বাজারে নাপা শাকের আঁটি ৬০ টাকা বিক্রি করছি।এমন দাম থাকলে গত বছরের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবো।’
একই গ্রামের কৃষক মকছেদ আলী (৪৫) বলেন, ‘আমার এক বিঘা জমিতে নাপা শাক, ধনিয়া পাতা এবং পালং শাক আবাদ করেছি। ভালো ফলন হয়েছে। পালং শাকের কেজি ও নাপা শাকের আঁটি ৬০ টাকা এবং লাল শাকের আঁটি ১০ টাকা দরে বিক্রি করছি। এই দাম থাকলে খরচ বাদ দিয়ে লাভবান হবো।’
শাকসবজির দাম বেশির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘হাল চাষ, শ্রমিক, সার ও বীজের মূল্যবৃদ্ধির কারণে উৎপাদন খরচ বেড়েছে। সেইসঙ্গে সবকিছুর দামই এখন বেশি। কম দামে বিক্রি করলে আমাদের লোকসান গুনতে হবে।’
কিচেন মার্কেটে বাজার করতে আসা শহরের উকিলের মোড় মহল্লার শাহেদা বেগম বলেন, ‘শীতের শুরুতে বাজারে প্রচুর শাকসবজি উঠেছে। কিন্তু দাম অনেক বেশি। দিন আনে দিন খাওয়া মানুষের শাকসবজি কেনা মুশকিল। তবু বেশি দাম দিয়ে পালং শাক, ধনিয়া পাতা ও ফুলকপি কিনলাম।’
একই বাজারের খুচরা সবজি বিক্রেতা ইলিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘নতুন সবজি হিসেবে পাইকারি বাজারে দাম একটু বেশি। আরও কয়েকদিন এই দাম থাকবে। সরবরাহ বাড়লে দাম কমে যাবে।’
সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আতিক আহমেদ বলেন, ‘উপজেলায় এবার এক হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে শাকসবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে আগাম শাকসবজি বাজারে উঠেছে। এসব শাকসবজির দাম চড়া। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় শাকসবজিতে রোগ-বালাই কম। কৃষক-চাষিরা ভালো দাম পেলে শাকসবজি চাষে আগ্রহী হবেন।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা হুমায়রা মন্ডল বলেন, ‘কৃষকরা বাড়তি দামের আশায় উঁচু জমিতে আগাম শাকসবজি চাষ করেন। আগাম সেসব শাকসবজি বাজারে উঠেছে। এজন্য দাম একটু বেশি। ভালো দাম পেয়ে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। আশা করছি, বাজারে সরবরাহ বাড়লে দাম কমে যাবে।’
সূত্রঃ বাংলা ট্রিবিউন
Leave a Reply