1. admin@ritekrishi.com : ritekrishi :
  2. ritekrishi@gmail.com : ritekrishi01 :
সারা দেশে যায় কয়রার বিটি বেগুন
সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ০১:০৭ পূর্বাহ্ন

সারা দেশে যায় কয়রার বিটি বেগুন

  • আপডেটের সময় : সোমবার, ১০ এপ্রিল, ২০২৩
  • ৩৩৮ পড়া হয়েছে

খুলনার কয়রা উপজেলায় বারি বিটি বেগুনের চাষ বহু কৃষকের ভাগ্য বদলে দিয়েছে। ফলে বিভিন্ন গ্রামে দিন দিন এই বেগুনের আবাদ বাড়ছে।

খুলনার কয়রা উপজেলায় এখন সারা বছরই বেগুনের চাষ হচ্ছে। ফলনও ভালো হয়। এই বেগুন স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে খুলনা–সাতক্ষীরা থেকে শুরু করে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে। স্থানীয় কৃষি বিভাগ জানায়, কয়রা উপজেলার ১, ২, ৩ ও ৪ নম্বর কয়রা, উত্তর বেদকাশী, বতুলবাজার, মহারাজপুর, শ্রীরামপুরসহ বিভিন্ন গ্রামে বারি বিটি বেগুন চাষ করে কৃষকদের ভাগ্য বদলে গেছে।

খুলনার সর্বদক্ষিণের উপকূলীয় উপজেলা কয়রার মাটি লবণাক্ত। এই লবণাক্ত জমিতে বেগুনের আবাদ কয়েক বছর আগেও ছিল কল্পনার বাইরে। সেটিই এখন বাস্তবে রূপ নিয়েছে। আর তা সম্ভব হয়েছে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) গবেষণার মাধ্যমে বারি বিটি বেগুন-৪ উদ্ভাবনের ফলে। এই বেগুনের চাষ কয়রার কৃষকদের জীবন-জীবিকায় এখন গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। একসময় এখানকার জমিতে শুধু ধান চাষই হতো।

সম্প্রতি সরেজমিন গিয়ে আলাপকালে কয়রা উপজেলার কয়েকটি গ্রামের বেশ কয়েকজন কৃষক প্রথম আলোকে জানান, এবার তাঁরা বিটি বেগুনের বাম্পার ফলন পেয়েছেন। পাশাপাশি দামও মিলছে ভালো। এতে তাঁরা অত্যন্ত খুশি।

উপজেলার ৩ নম্বর কয়রা গ্রামের কৃষক আবুল হাসান এ বছর তিন বিঘা জমিতে বারি বিটি বেগুন-৪ জাতের বেগুন চাষ করেছেন। কয়েক মাস ধরে তিনি প্রচুর বেগুন তুলেছেন। এখনো তাঁর বেগুনখেতের প্রতিটি গাছে বেগুন ঝুলছে। তিনি জানান, এ বছরে প্রতি বিঘায় তাঁর খরচ হয়েছে ২৫ হাজার টাকা। ফলন যেমন ভালো হয়েছে, তেমনি দামও মিলছে বেশি। তিন বিঘা জমিতে ১৮ থেকে ২০ টন বেগুন পাওয়া যাবে। এতে মোট মুনাফা হতে পারে সাড়ে তিন লাখ থেকে চার লাখ টাকা। সে জন্য আগামী বছর আরও বেশি জমিতে বেগুন চাষ করবেন বলে জানান তিনি।

খুলনা কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. হারুন-অর-রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, কয়েক বছর আগে লবণাক্ত কয়রায় পরীক্ষামূলকভাবে বারি বিটি বেগুন-৪ চাষাবাদ করতে গিয়ে দেখা গেছে, দেশের অন্য যেকোনো এলাকার চেয়ে কয়রার আবহাওয়াই এই জাতের বেগুন চাষাবাদের জন্য সবচেয়ে উপযোগী। এই বেগুনের বাজারদরও বেশ চড়া। তাই আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার আশায় কৃষকেরা দিন দিন বারি বিটি-৪ জাতের বেগুন চাষে ঝুঁকছেন।

সম্প্রতি উপজেলার ৩ নম্বর কয়রা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বিস্তৃত মাঠজুড়ে বিটি বেগুনের চাষ হয়েছে। গাছে গাছে দুলছে বেগুন। মাঠের পাশাপাশি প্রায় প্রতিটি বাড়ির উঠোনেও হয়েছে বিটি বেগুনের চাষ। গ্রামের কৃষকেরা জানান, বিভিন্ন জেলার পাইকারেরা এসে তাঁদের কাছ থেকে বেগুন কিনে নিয়ে যান। প্রতি কেজি বেগুন পাইকারিতে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অবশ্য খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে।

ওই গ্রামের কৃষক গোপাল সরদার বলেন, ‘এই বেগুন চাষে খরচ কম, লাভ বেশি। গত দুই মাসে প্রায় দেড় লাখ টাকার বেগুন বিক্রি করেছি। সামনে আরও দুই লাখ টাকার বেগুন বিক্রি করতে পারব বলে আশা করছি।’

শ্রীরামপুর গ্রামের আবদুল হাকিম জানান, তিনি এ বছর দেড় বিঘা জমিতে বিটি বেগুন চাষ করেছেন। বেগুনে পোকা ধরেনি। ফড়িয়ারা জমিতে এসেই বেগুন নিয়ে যাচ্ছেন। এখনো ৮০ হাজার টাকার বেগুন বিক্রি হবে বলে আশা তাঁর।

বেগুনের ফড়িয়া আমির হোসেন, আবদুর রব ও কামাল হোসেন জানান, স্থানীয়ভাবে কিনে তাঁরা খুলনা, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠান। তাঁরাও এবার ভালো লাভের মুখ দেখেছেন।

কয়রা উপজেলার কৃষি কমকর্তা অসীম কুমার দাশ প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত বছর এই উপজেলায় ৬০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। বেগুন উৎপাদন হয়েছিল ২ হাজার ১০০ মেট্রিক টন। এ বছর ৭২ হেক্টর জমিতে বেগুন চাষ হয়েছে। বাম্পার ফলন হয়েছে। আশা করছি, ২ হাজার ৫০০ মেট্রিক টনের মতো বেগুন উৎপাদিত হবে।’

কয়রা উপজেলায় কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের বৈজ্ঞানিক সহকারী মো. জাহিদ হাসান বলেন, ২০১৬ সালে প্রথমবার এখানে এক বিঘা জমিতে বারি বিটি বেগুন-৪ চাষ হয়। এটি লবণসহিষ্ণু এবং পোকার আক্রমণমুক্ত থাকে। ফলে কীটনাশক ব্যবহার করতে হয় না। জাতটি উচ্চফলনশীল (উফশী) এবং গাছ লাগানোর দুই মাসের মধ্যে বেগুন সংগ্রহ করা যায়। এই বেগুনের গড় ওজন ২৫০ গ্রাম পর্যন্ত হয়। এ কারণে কয়রায় কৃষকদের মধ্যে এ জাতের বেগুন চাষে আগ্রহ বেড়েছে।

সূত্র : প্রথম আলো

সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Error Problem Solved and footer edited { Trust Soft BD }
More News Of This Category
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত - রাইট কৃষি-২০২১-২০২৪
Web Design By Best Web BD