বেগুন সবজি হিসেবে সুস্বাদু। এর পুষ্টিগুণও মন্দ নয়। প্রায় সারা বছরই চাষ করা যায় এই সবজি। দৈনন্দিন চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি আর্থিক স্বচ্ছলতা আনা সম্ভব।
আমাদের দেশের প্রায় সব জেলাতেই কমবেশি বেগুনের চাষ করা হয়ে থাকে। আমাদের অনেকেরই বেগুন চাষ পদ্ধতি অজানা। সারা বছরই বেগুন চাষ করা হয়। বেগুনের গাছ প্রায় ৪০ থেকে ১৫০ সেমি লম্বা হয়। আমরা বেগুন সবজি হিসাবে খেয়ে থাকি,
মাটিঃ সব মাটিতেই বেগুন জন্মে। তবে দো-আঁশ, এটেল দো-আঁশ ও পলিমাটি বেশি উপকারী। এছাড়া শীতকালে ফলন বেশি হয়।বেগুন সাধারণত ১৫ থেকে ২৫ ডিগ্রি তাপমাত্রায় ভাল ফলন দিয়ে থাকে। তাপমাত্র এর কমবেশি হলে বেগুনের ফুল ও ফল ধারণ ব্যাহত হয়।
রোপণ সময় কালঃ প্রথমে বীজতলায় চারা তৈরি করে নিন। এরপর ৫-৬ সপ্তাহ বয়সের চারা ৭৫ সেন্টিমিটার দূরত্বে সারি করে ৬০ সেন্টিমিটার দূরে দূরে লাগাতে হয়। গাছের আকার অনুযায়ী দূরত্ব ১০-১৫ সেন্টিমিটার কম-বেশি করা যায়।
সারঃ সকদের মতে মানসম্পন্ন ভালো ফলন পেতে বেগুন চাষের জমিতে যতটুকু সম্ভব জৈব সার দিয়ে জমি প্রস্তুত করতে হবে। প্রয়োজন মতো সার প্রয়োগের ক্ষেত্রে মাটি পরিক্ষা করে মাটির ধরন অনুযায়ী সার দিতে হবে। জৈব সার ব্যবহার করলে গুণগতমান বজায় থাকে ও পরিবেশ ভালো থাকে।
বেগুন গাছে সার দেওয়ার নিয়ম প্রতি হেক্টর জমিতে গোবর ৮ থেকে ১২ টন, ১৪৫ থেতে ১৫৫ কেজি টিএসপি, ২৪০ থেকে ২৬০ কেজি এমওপি, ৩৭০ থেকে ৩৮০ কেজি ইউরিয়া সার প্রয়োগ করতে হয়। জমিতে তিন কিস্তিতে সার প্রয়োগ করতে হয়। প্রথম কিস্তি সার জমিতে চারা লাগানের ১০-২৫ দিনপর, ফল ধরা শুরু করলে দ্বিতীয় কিস্তির সার ও ফল তোলার মাঝামাঝি সময়ে তৃতীয় কিস্তির সার দিতে হবে।
পরিচর্যাঃ মাঝে মাঝে গাছের গোড়ার মাটি আলগা করে দিতে হয়। শীতকালীন ও আগাম লাগানো বর্ষাকালীন বেগুনের জন্য প্রচুর পানি প্রয়োজন হয়। বেলে মাটিতে ১০-১৫ দিন পর সেচ দিতে হয়। বর্ষাকালীন ও বারোমাসী বেগুনের জন্য পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থাও করতে হয়।
বেগুন সংগ্রহও ফলনঃ খাওয়ার উপযোগী বেগুন সংগ্রহের সময় সাবধানে সংগ্রহ করতে হবে। সম্পূর্ণ পরিপক্ক হওয়ার আগেই সংগ্রহ করতে হয়। সাধারণত ফুল ফোটার পর থেকে ফল পেতে ১ মাস সময় লাগে। লক্ষে রাখতে হবে গাছে যেন আঘাত না লাগে। জাত ভেদে হেক্টর প্রতি ১৭-৬৪ টন ফলন পাওয়া সম্ভব।
Leave a Reply