বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয়েছে বেগুনি বা রানি গোলাপি, হলুদ রঙের ফুলকপি এবং ব্রোকলির চাষ। ফেনীর দাগনভূঞায় চাষ করা এ সবজি দেখতে যেমন সুন্দর, খেতেও সুস্বাদু। তাই বাজারে বেশ চাহিদা রয়েছে। উপজেলার কৃষকেরা সাধারণত সাদা ফুলকপির আবাদ করেন।
পৌর এলাকার জগতপুর গ্রামের অর্গানিক ভেজিটেবল গার্ডেনের মালিক তরুণ উদ্যোক্তা মো. হাসান আহমেদ এসব সবজি চাষ করেন। তিনি আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ১২০ শতক জমিতে এবারও বাণিজ্যিকভাবে এসব সবজি চাষ করেছেন।
সরেজমিনে জানা গেছে, পরিচর্যার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন হাসান। রঙিন ফুলকপি, ব্রোকলি, বিটরুট, চাইনিজ ক্যাবেজ, চেরি টমেটো, শালগম, ধান, সরিষাসহ ফুলকপি ও বাঁধাকপি চাষ করছেন তিনি। বিভিন্ন গ্রাম থেকে রঙিন ফুলকপি দেখতে এসেছেন অনেকেই। কেউ কেউ হাতে নিয়ে ছবি তুলছেন। অনেকে বাগান থেকেই কিনে নিচ্ছেন।
দর্শনার্থী ফারহান আলী বলেন, ‘আমারও ইচ্ছা আছে রঙিন ফুলকপি চাষ করার। এ জন্য সরাসরি দেখতে আসছি। ফুলকপিগুলো দেখতে খুব ভালো লাগছে। এর চাহিদাও দ্বিগুণ। খেতেও অনেক সুস্বাদু।’
স্থানীয় কৃষক রফিক উল্যাহ বলেন, ‘এই প্রথম হাসান আহমেদের জমিতে রঙিন ফুলকপি চাষ দেখেছি। দেখতে খুব সুন্দর। বাজারে দামও বেশ ভালো। আগামীতে আমি এই রঙিন ফুলকপি চাষ করবো।’
উদ্যোক্তা হাসান বলেন, ‘দুই বছর আগে রঙিন ফুলকপির পরীক্ষামূলক চাষ শুরু করি। এ বছর ব্যাপকভাবে চেষ্টা করেছি। সফলও হয়েছি। ফলন হয়েছে ভালো। দামও ভালো পাচ্ছি। রঙিন হওয়ায় বাজারে এর দাম দ্বিগুণ। এ পর্যন্ত প্রায় ৩ হাজার কেজি রঙিন ফুলকপি বিক্রি করেছি। প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা বিক্রি করেছি। এখন কিছুটা কম দরে বিক্রি করছি। অনলাইনেও অর্ডার করে থাকেন অনেকেই।’
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘উদ্যোক্তা হাসানকে সব ধরনের পরামর্শ দিচ্ছি। আমরা চাই সব কৃষকের মাঝে তথ্যপ্রযুক্তির নতুনত্ব পৌঁছে দিতে। সেই লক্ষ্যে কাজ করছি। আশা করছি তার দেখাদেখি অন্যরাও রঙিন ফুলকপি চাষে আগ্রহী হবেন।’
দাগনভূঞা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘হাসান আহমেদ আধুনিক কৃষিপ্রযুক্তি নিয়ে কাজ করেন। বাণিজ্যিকভাবে বিভিন্ন ধরনের চাইনিজ ভেজিটেবল চাষ করে ফেনী জেলায় সাড়া ফেলেছেন। আগামীতে অন্য উদ্যোক্তাদের চাইনিজ ভেজিটেবল দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করার সুযোগ আছে। এগুলো দেখতে রঙিন হওয়ায় ভোক্তারা বেশি কেনেন।’
Leave a Reply