1. admin@ritekrishi.com : ritekrishi :
  2. ritekrishi@gmail.com : ritekrishi01 :
শিমের রাজ্যে ভাইরাসের হানা, দিশেহারা কৃষক
বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৪:৪৯ পূর্বাহ্ন

শিমের রাজ্যে ভাইরাসের হানা, দিশেহারা কৃষক

  • আপডেটের সময় : শনিবার, ৩০ আগস্ট, ২০২৫
  • ৩১ পড়া হয়েছে

শিমের রাজ্যে হিসেবে পরিচিত পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলা। এখানে প্রায় ৩০ বছর ধরে বাণিজ্যিকভাবে শিম চাষ হয়। শিম সাধারণত শীতকালীন সবজি হলেও উপজেলার কৃষকেরা এক যুগ ধরে আগাম শিম চাষ করছেন। এতে চাষিরা প্রতি বছরই লাভবান হচ্ছেন। এবার অতিবৃষ্টির কারণে শিমের জমিতে হলুদ মোজাইক নামের এক ধরনের ভাইরাস আক্রমণ করেছে। এ ছাড়া সাদা মাছি ও জাব পোকা শিম ক্ষেত নষ্ট করছে। এতে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখার বদলে দিশেহারা হতে চলেছেন চাষিরা।
জানা যায়, আষাঢ় মাসে আগাম শিমের আবাদ শুরু হয়। এবার শিম চাষের শুরুতেই দফায় দফায় বৃষ্টির মুখে পড়েন চাষিরা। ফলে বেশিরভাগ শিমের জমিতে পানি জমে যায়। অতিবৃষ্টির কারণে শিম গাছের গোড়া দুর্বল হয়ে পড়ায় ভাইরাস আক্রমণ করে। গাছের গোড়ায় পচন ধরে। এ ছাড়া গাছের পাতা বাদামি ও হলুদ হয়ে পাতা ঝরে পড়ছে। শিমের লতা-ডগা কুঁকড়ে যাচ্ছে। ফলে বাধ্য হয়ে চাষিরা কুঁকড়ে যাওয়া শিমের লতা, পাতা ও ডগা কেটে দিচ্ছেন।
অধিকাংশ আগাম শিমের জমিতে ফুল ফুটেছে। কিছু জমিতে ফলন শুরু হয়েছে। অতিবৃষ্টিতে শিমের ফুল ঝরে যাচ্ছে। বিরূপ আবহাওয়ায় ভাইরাস ও ছত্রাকের আক্রমণে কীটনাশক ব্যবহার করেও সুফল মিলছে না। শ্রাবণের শেষ সপ্তাহে আগাম শিম বাজারে বিক্রি শুরু হয়েছে। এবার ফলন বিপর্যয় দেখা দেওয়ায় প্রতি বিঘায় ৮-১০ কেজি শিম উঠছে। অন্যান্য বছর এ সময় প্রতি বিঘা জমি থেকে প্রতিদিন ৩০-৪০ কেজি শিম তোলা যেত।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, ঈশ্বরদীতে এবার শিম চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয়েছে ১ হাজার ২৯০ হেক্টর। এর মধ্যে আগাম জাতের অটোশিমের আবাদ হয়েছে ৮৯০ হেক্টর জমিতে।

আগাম শিম চাষের গ্রাম খ্যাত উপজেলার রামনাথপুর, বেতবাড়িয়া, শেখপাড়া, মুলাডুলি, ফরিদপুর, বাঘহাছলা, সরাইকান্দি, আটঘরিয়া ও শ্রীপুর ঘুরে দেখা যায়, বেশিরভাগ শিম ক্ষেত ফুলে ফুলে ভরে গেছে। ফুলের মাঝে মাঝে শিম ঝুলে আছে। তবে এবার ফলন খুব কম চোখে পড়েছে। কৃষকেরা কেউ গাছের পরিচর্যায় ব্যস্ত আবার কেউ শিম তোলায় ব্যস্ত। এসবের মাঝে কৃষকদের সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তা শিমে ভাইরাস ও ছাত্রকের আক্রমণ। এতে ফলন কম হওয়ার পাশাপাশি কৃষকদের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

বাঘহাছলা গ্রামের চাষি মফিজ উদ্দিন শেখ বলেন, ‘অতিবৃষ্টির কারণে শিম ক্ষেতে ভাইরাস ও ছত্রাক আক্রমণ করেছে। শিমের ডগা, লতা কুঁকুড়ে পাতা শুকিয়ে যাচ্ছে। ভাইরাসের জন্য আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। ওষুধ কোম্পানির ডিলারদের কাছে গেলে তারা নানা ধরনের কীটনাশক দেন। এতে খুব বেশি কাজ হয় না। আমরা প্রতিকার চাই।’
রামনাথপুর গ্রামের কৃষক রায়হান আলী ভাইরাস থেকে রক্ষা করতে কীটনাশক স্প্রে করছিলেন। এসময় তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘এবার অতিবৃষ্টির কারণে আগাম শিমের জমিতে ভাইরাস আক্রমণ করেছে। এতে গাছের লতা কুঁকড়ে যাচ্ছে এবং পাতা হলুদ হয়ে যাচ্ছে। ভাইরাস থেকে শিম গাছ বাঁচাতে কীটনাশক স্প্রে শুরু করেছি। খুব বেশি সুফল মিলছে না। এবার শিমের কী যে হবে বুঝতে পারছি না।’
বাঘহাছলা গ্রামের চাষি হাবিবুর রহমান বলেন, ‘শিমের জমিতে যে রোগ দেখা দিয়েছে, এতে ফলন কম হবে। একসময় শিম বিক্রি করা কঠিন হয়ে যাবে। এ রোগের কারণে পাতা হলুদ হয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিন গাছের লতা ও পাতা কেটে ফেলে দিতে হচ্ছে।’

একই গ্রামের সূর্যবান বলেন, ‘এক বিঘা জমিতে শিমের আবাদ করেছি। জমিজুড়ে ভাইরাস আক্রমণ করেছে। প্রতিদিন সকালে এসে হলুদ এবং কুঁকড়ে যাওয়া লতা, পাতা ও ডগা ছিঁড়ে ফেলে দিতে হচ্ছে। এতে ফলন কমে যাবে। সার ও কীটনাশকের খরচও বাড়ছে।’
মুলাডুলি ইউনিয়নের সরাইকান্দি ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রুমানা পারভীন  বলেন, ‘এ ব্লকে প্রায় ২০০ হেক্টর জমিতে শিমের আবাদ হয়েছে। অতিবৃষ্টির কারণে কৃষকেরা সময়মতো শিম গাছের পরিচর্যা করতে পারেননি। কিছু গাছে ভাইরাস দেখা যাচ্ছে। এতে শঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। সাদা মাছি ও জাব পোকা কীটনাশক স্প্রে করলে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। ভাইরাস আক্রান্ত হলে গাছ উপড়ে ফেলতে হবে। কোনো ডগা ও পাতায় আক্রমণ করলে তা কেটে ফেলতে হবে।’
ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল মমিন বলেন, ‘ঈশ্বরদী উপজেলায় ৮৯০ হেক্টর জমিতে আগাম শীমের আবাদ হয়েছে। এরই মধ্যে শিম হারভেস্ট শুরু হয়ে গেছে। অতিবৃষ্টির কারণে কৃষকের উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। বৃষ্টি থেমে গেলে কৃষক আরও লাভবান হবেন বলে আশা করছি।’

সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Error Problem Solved and footer edited { Trust Soft BD }
More News Of This Category
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত - রাইট কৃষি-২০২১-২০২৪
Web Design By Best Web BD