কুড়িগ্রামের বুক চিরে বয়ে গেছে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, দুধকুমারসহ ১৬টি নদ-নদী। এসব নদীর দুই পাড়ে জেগে ওঠেছে চর। এসব চরে আখ চাষ করছেন কৃষকরা। তবে বন্যায় কিছুটা ক্ষতি হলেও আখের ফলন বাম্পার হয়েছে। কম খরচ ও অল্প পরিশ্রমে অধিক ফলন পাওয়ায় আশায় বুক বাধছেন কৃষকরা।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এবার আখ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৩৬৪ হেক্টর জমিতে। তবে আবাদ হয়েছে ১৮৫ হেক্টর জমিতে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নদ-নদীর জেগে ওঠা চরে এ বছর ব্যাপকভাবে আখের আবাদ হয়েছে। আখও বেশ পুষ্ট ও মোটা হয়েছে। ফলনও হয়েছে ভালো। আখ কেটে তা বিক্রিও শুরু করেছেন অনেক কৃষক। কেউ আবার শেষ সময়ে আখ খেত পরির্চযায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। অন্যান্য ফসলের চেয়ে আখ চাষে লাভ বেশি। তাই আখ চাষে ঝুঁকছেন চাষিরা। সব মিলে খরচ বাদ দিয়ে প্রায় অর্ধেক লাভ থাকবে।
আখচাষিরা জানান, প্রতি বিঘা জমিতে আখ চাষ করতে ২২-২৫ হাজার টাকা খরচ হয়। আর প্রতি বিঘা জমির আখ ৬৫-৭০ হাজার টাকা বিক্রি করা যায়। পাইকাররা জমি থেকেই আখ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
ভুরুঙ্গামারী উপজেলার দুধকুমার নদীর অববাহিকার আখচাষি আব্দুস ছামাদ বলেন, ৩৬ শতাংশ জমিতে আখ চাষ করছি। খরচ হয়েছে প্রায় ২৫ হাজার টাকা। ফলনও বেশ ভালো হয়েছে। এক পাইকার জমির সব আখ ৫০ হাজার টাকা দাম বলছে। কিন্তু বিক্রি করিনি।
ওই এলাকার আরেক চাষি সোহরাব হোসেন বলেন, এক বিঘা জমিতে আখ চাষ করছি। ফলন ভালো হয়েছে। এখন বাজার ভালো আছে। খরচ বাদে অর্ধেক লাভ হবে বলে আশা করছি।
চিলমারী উপজেলার ফেরদৌস নামে এক চাষি বলেন, আমি দেড় বিঘা জমিতে আখ চাষ করছি। এখনও বিক্রি শুরু করিনি। প্রতি বিঘা জমির আখ ৭০ হাজার টাকার ওপরে বিক্রি করতে পারব বলে আশা করছি।
ভুরুঙ্গামারী উপজেলা কৃষি র্কমর্কতা সুজন কুমার ভৌমিক বলেন, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৭ হেক্টর জমিতে আখের চাষ হয়েছে। চরাঞ্চলরে মাটি আখ চাষের জন্য বেশ উপযোগী। ফলে জেগে ওঠা চরে আখ চাষ বাড়ছে। আখের ফলন ভালো হওয়ায় কৃষক আগ্রহী হচ্ছেন।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের র্কমর্কতা মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, জেলায় এ বছর ১৮৫ হেক্টর জমিতে আখ চাষ হয়েছে। ফলনও হয়েছে ভালো। তবে বন্যার কারণে আখ জমিতে হেলে পড়ায় কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। তার পরও কৃষকরা লাভবান হবেন।
জুয়েল রানা/এসপি
Leave a Reply