আমাদের বাংলাদেশে শীত ও গ্রীষ্ম দুই ঋতুতেই ডাটা শাক চাষ করা যায়। এই শকের চাষাবাদ খুব একটা কঠিন; খুব সহজে করা যায়।
বপন সময়ঃ খরিফ মৌসুম (মার্চ-এপ্রিল) ও রবি মৌসুম (সেপ্টেম্বর-অক্টোবর)। (রবি) উভয় মৌসুমে ডাটা শাকের চাষ করা যায়।ডাটা শাক চাষের জন্য জন্য সুনিষ্কাশিত উর্বর ও গভীর মাটি উত্তম
বীজ হারঃ বিঘা প্রতি ১৯৮-৩৩০ গ্রাম বীজ প্রয়োজন অথবা, শতাংশ প্রতি ৬-১০ গ্রাম বীজ প্রয়োজন।
জমি তৈরি ও বীজ বপন
ডাটা শাক চাষাবাদের জমি গভীর ভাবে চাষ ও মই দিতে হবে (মাটি যেন মিহি হয় এবং জমি যাতে ঢেলামুক্ত হয়।
* এরপর ২.১৮ হাত প্রশ্বস্ত এবং প্রয়োজন মত লম্বা করে বেড তৈরি করে নিতে হবে।
* ২ বেডের মাঝে ১ ফুট (৩০ সেমি.) নালা থাকবে।
* কম করে ৩০ সেমি. দূরত্ব রেখে সারি তৈরি করতে হবে।
* বীজ সরাসরি ছিটিয়ে অথবা লাইন করে বোনা যায়।
* লাইনের ক্ষেত্রে বেডের উভয় পাশে ১০ সেমি.বাদ রেখে লম্বালম্বি ২০ সেমি. দূরে দূরে লাইন করে বীজ বোনতে হবে।
* সারিতে কাঠির সাহায্যে ১.০ থেকে ১.৫ সে.মি. গভীর লাইন টানতে হবে।
* লাইনে বীজ বোনে হাত দিয়ে সমান করে দিতে হবে।
* ছিটিয়ে বুনলে বীজের সঙ্গে সমপরিমাণ ছাই বা পাতলা বালি মিশিয়ে নিলে সমভাবে বীজ পড়বে।
* বপনের পর হাল্কাভাবে মই দিয়ে বীজ ঢেকে দিতে হবে।
* চারা গজানোর পর ক্রমান্বয়ে পাতলা করে দিতে হবে।
* যেন শেষ পর্যন্ত সারিতে পাশাপাশি দুটি গাছ ৮/১২ সে.মি. দূরত্বে থাকে।
* জমিতে পর্যাপ্ত রস না থাকলে ঝাঝরি দিয়ে হাল্কা করে পানি ছিটিয়ে দিতে হবে।
* তাহলে বীজ দ্রুত এবং সমানভাবে গজাবে।
* ডাটা চাষের জন্য শতাংশ প্রতি ১৫ গ্রাম বীজের প্রয়োজন হয়।
সার প্রয়োগ
ডাটা শাকের ভালো ফলন পেতে হলে চাষাবাদের জমিতে পরিমিত মাত্রায় সার দিতে করতে হবে। প্রতি শতকের জন্য
* গোবর/কম্পোস্ট সার ৪০কেজি ,
* ২৬৪ গ্রাম ইউরিয়া,
* টিএসপি ৮০০গ্রাম
* এমওপি ৬০০গ্রাম প্রয়োগ করতে হয়।
জমি শেষবার চাষ দেওয়ার সময় গোবর, টিএসপি, অর্ধেক ইউরিয়া এবং পটাশ সার সমানুপাতে মাটিতে ছিটিয়ে দিতে হবে। বীজ বোনার ১৫ দিন বাদে বাকি পটাশ এবং ইউরিয়া সার প্রয়োগ করতে হবে।
গাছ পাতলাকরণ ও আগাছা দমনঃ বীজ বপনের এক সপ্তাহ পর গাছ পাতলা করণ ও আগাছা পরিষ্কার করতে হবে। সারিতে ৫সেমি. পর পর চারা রেখে পাতলা করে দিতে হবে। জমির উপর চটা লেগে গেলে ভেঙ্গেদিতে হবে। এতে করে দ্রুত গাছ বৃদ্ধি পাবে এবং গোড়া পচা রোগ থেকে রক্ষা পাবে।
পানি সেচঃ শুষ্ক মৌসুমে এক সপ্তাহ পর পর সেচ দিতে হবে। নতুবা শাক খসখসে হয়ে যাবে।
ফলন ও ফসল সংগ্রহ
* দুটি জাতের মধ্যে ৫০০ মি. দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
* বীজ উৎপাদনের জন্য মার্চের প্রথম সপ্তাহে বীজ বপন করতে হবে।
* বীজ উৎপাদনের ক্ষেত্রে সারি থেকে সারি এবং গাছ থেকে গাছের দূরত্ব উভয়ই এক ফুটহতে হবে।
* রোগ-পোকা দমনের জন্য প্রয়োজনীয় বালাইনাশক প্রয়োগ করতে হবে।
* বীজ কালো রং ধারন করলে সংগ্রহ করা যাবে। সাধারনত বীজ বপনের ৯০-১০০ দিনেরমধ্যে বীজ সংগ্রহ করা যায়।
* বীজের ফলনঃ বিঘা প্রতি ডাটা শাকঃ ৬৬-৮২.৫ কেজি।
Leave a Reply