1. admin@ritekrishi.com : ritekrishi :
  2. ritekrishi@gmail.com : ritekrishi01 :
বিচালির বিনিময়ে ধান কাটছেন কৃষিশ্রমিকেরা
বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫, ০১:৪৭ অপরাহ্ন

বিচালির বিনিময়ে ধান কাটছেন কৃষিশ্রমিকেরা

  • আপডেটের সময় : বুধবার, ৯ অক্টোবর, ২০২৪
  • ১৭০ পড়া হয়েছে

সবুজ-শ্যামল গ্রামটির মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে পাকা সড়ক। এ সড়কের চারমাথা মোড়ে ইঞ্জিনচালিত মেশিনে ধান মাড়াইয়ের কাজ করছিলেন আমিনুল ইসলাম, তোফায়েল আহমেদ, জসিম উদ্দিনসহ ১২ জন কৃষিশ্রমিক। মাড়াই শেষে ধান বস্তায় ভরছিলেন জমির মালিক জামাত আলী। আর আটি বাঁধা ধানের কাঁচা বিচালি পাশের পিকআপ ভ্যানে তুলতে ব্যস্ত দেখা যায় মহরম আলী নামের এক ব্যবসায়ীকে। তাঁরা সবাই জানান, চাহিদা ও মুনাফা বেশি হওয়ায় বিচালির বিনিময়েই জমি থেকে ধান কেটে মাড়াই করে দিচ্ছেন স্থানীয় কৃষিশ্রমিকেরা।

দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের হরিহরপুর গ্রামে আজ মঙ্গলবার সকালে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। এ ছাড়া উপজেলার মুকুন্দপুর ইউনিয়ন, বিনাইল ইউনিয়ন ও জোতবানী ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে এখন আগাম জাতের (ব্রি-ধান-৭৫) ধান কাটা ও মাড়াই চলছে; যা শুরু হয়েছে গত সপ্তাহে। গ্রামগুলোতে গরুর খামার ও গৃহপালিত গরুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত শুকনা খড়ের সংকট দেখা দিয়েছে। সেই সঙ্গে শুকনা খড়ের মূল্যবৃদ্ধিসহ ইত্যাদি কারণে কাঁচা বিচালির চাহিদা বেড়ে গেছে। তাই স্থানীয় কৃষিশ্রমিকেরা বিচালির বিনিময়ে কৃষকের আমন ধান কেটে দিচ্ছেন বলে জানা গেছে।

স্থানীয় কয়েকজন কৃষক বলেন, এলাকায় টানা বৃষ্টি ও রোদের ঘাটতির কারণে কাঁচা বিচালি শুকানো সম্ভব হচ্ছে না। এর ফলে কাঁচা খড় পচে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় কৃষকেরাই এর বিনিময়ে ধান কেটে নিচ্ছেন। এ ছাড়া শ্রমিক দিয়ে প্রতি বিঘা জমির ধান কাটাতে খরচ হচ্ছে প্রায় আট হাজার টাকা। আগাম জাতের ধান কাটার সঙ্গে সঙ্গে সেই জমিতে আগাম জাতের আলু রোপণ করবেন কৃষকেরা। এ জন্য ধান কাটতে বাড়তি খরচ না করে কৃষকেরা বিচালির বিনিময়ে ধান কেটে নিচ্ছেন।

কৃষিশ্রমিকেরা বলছেন, প্রতি বিঘা ধান মাড়াই করে তাঁরা ১ হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ আটি কাঁচা বিচালি পাচ্ছেন। সেই বিচালি প্রতি আটি চার টাকা করে বিক্রি করে প্রতি বিঘা জমির ধান কেটে প্রায় ৬ হাজার ৪০০ টাকা আয় হচ্ছে। কৃষিশ্রমিকেরা দিনে প্রায় দুই বিঘা জমির ধান কেটে মাড়াই করে দিচ্ছেন। বিচালি বিক্রির টাকা দৈনিক নিয়মিত মজুরির চেয়ে বেশি হওয়ায় এমন চুক্তিতে আগাম জাতের ধান কাটছেন তাঁরা। এতে প্রতিদিন গড়ে একজন কৃষিশ্রমিকের ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা আয় হচ্ছে।
হরিহরপুর গ্রামের কৃষিশ্রমিক আমিনুল বলেন, ‘এক বিঘা জমির ধান কাটলে ওখান থেকে প্রায় ১৬ শ আটি কাঁচা খ্যাড় পাওয়া যাচে। প্রতি আটি খ্যাড় ৪ ট্যাকা করে বিক্রি করোছি। এক বিঘা জমির ধান কাটে খ্যাড় বিক্রি করে প্রায় ছয় হাজার ট্যাকার ওপরে পাওয়া যাচে। দিনে দুই বিঘা জমির ধান কাটলে একেকজনের প্রায় ৬০০ টাকা কামাই হচে।’

উপজেলার ৪ নম্বর দিওড় ইউনিয়নের বিজুল গ্রাম থেকে হরিহরপুরে কাঁচা বিচালি কিনতে এসেছেন ব্যবসায়ী মহরম আলী। তিনি বলেন, তাঁর এলাকায় অধিকাংশ কৃষক কাটারিভোগ ধান চাষ করছেন। সেগুলো পাকেনি। কাটলা ইউনিয়নে আগাম জাতের ধান প্রচুর পরিমাণে আবাদ হয়েছে। এ এলাকায় এসব ধান কাটা-মাড়াই শুরু হয়েছে। সকালে কাঁচা বিচালির প্রতি ১০০ আটি ৪০০ টাকা দরে কিনেছেন তিনি। বাজারে এসব বিচালি প্রতি আটি পাঁচ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (অতিরিক্ত) জাহিদুল ইসলাম ইলিয়াস প্রথম আলোকে বলেন, বিরামপুরে চলতি মৌসুমে ১৭ হাজার ৪৪৫ হেক্টর জমিতে আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। সেখানে ১৭ হাজার ৪৪১ হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ হয়েছে। এসব জমিতে ব্রি ধান-৭৫, ব্রি ধান-৮৭ ও ব্রি ধান ৯০ আগাম জাতের ধান আবাদ হয়েছে। ইতিমধ্যে কিছু কিছু এলাকায় ধান কাটা শুরু হয়েছে। আগাম জাতের ধান কেটে কৃষকেরা এসব জমিতে আগাম জাতের শর্ষে ও আলু আবাদ করবেন।

সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Error Problem Solved and footer edited { Trust Soft BD }
More News Of This Category
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত - রাইট কৃষি-২০২১-২০২৪
Web Design By Best Web BD