নওগাঁর বাজারগুলোতে শীতকালীন জনপ্রিয় ও সুস্বাদু সবজি ফুলকপি কৃষকদের প্রাপ্ত মূল্যের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ মূল্যে ক্রয় করতে হচ্ছে সাধারণ ভোক্তাদের। শীতকাল এলেই ফুলকপি প্রতিটি পরিবারেই যেন অপরিহার্য হয়ে ওঠে। ফুলকপি, আলু, কুমড়া বড়ি ও মাছের ঝোল মানুষের রসনাকে বাড়িয় তোলে। আর তাই বাজারের থলিতে একটা ফুলকপি চাই। চলতি মৌসুমে জেলায় ২৫০ হেক্টর জমিতে ফুলকপির আবাদ হয়েছে। যা থেকে ৬ হাজার ৭৫০ মেট্রিক টন ফুলকপি উৎপাদিত হবে বলে প্রত্যাশা কৃষি বিভাগের।
নওগাঁ জেলা সদরে এবং সদর উপজেলার হাপানিয়া ইউনিয়নের ডাক্তারের বাড়ির মোড়ে প্রতিদিন ভোর থেকে বসে ফুলকপি বিক্রির পাইকারি বাজার। বিভিন্ন গ্রাম থেকে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ফুলকপি নিয়ে আসেন এবং পাইকারদের নিকট বিক্রি করেন। পাইকাররা কৃষকদের নিকট থেকে ছোট ফুলকপি প্রতি কেজি ৩০ টাকা, মাঝারি আকারের ফুলকপি ৪০ টাকা কেজি এবং বড় আকারের ফুলকপি ৫০ টাকা কেজি করে ক্রয় করেন।
খুচরা বাজারে ব্যবসায়ীরা সাধারণ ক্রেতাদের নিকট ফুলকপি কেজি হিসেবে বিক্রি না করে পিস হিসেবে বিক্রি করে থাকেন। ছোট কপি প্রতিটি কমপক্ষে ২০ টাকায়, মাঝারি আকারের ফুলকপি প্রতিটি ৩০ টাকা এবং বড় আকারের ফুলকপি প্রতিটি ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি করছেন। ছোট আকারের ফুলকপি ৪টিতে এক কেজি হয়। সেই হিসেবে ভোক্তা পর্যায়ে এই চারটি কপির বিক্রি মূল্য ৮০ টাকা অথচ কৃষক এই চারটি কপির মূল্য পেয়েছেন ৩০ টাকা। মাঝারি আকারের ফুলকপি এক কেজিতে ধরে ৩টি। খুচরা বাজারে ভোক্তা পর্যায়ে এই ৩টি কপির মূল্য ৯০ টাকা অথচ কৃষক এই কপির মূল্য পেয়েছেন ৪০ টাকা। অপরদিকে বর্তমান বাজারে বড় কপি কেজিতে ধরে ২টি। খুচরা ব্যবসায়ীরা এই ২টি কপি ক্রয় করেন ৫০ টাকায়। ভোক্তা পর্যায়ে এই দুটি ফুলকপি বিক্রি করছেন কমপক্ষে ১০০ টাকায়।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, কৃষকরা সাধারণত মারমুখী। যত তাড়াতাড়ি পারেন তাদের ফসল বিক্রি করে মাঠে নজর দেন। এজন্য বাজারে এসে অপেক্ষা না করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ফসল বিক্রি করে চলে যান। এই সুযোগে ব্যবসায়ীরা কম মূল্যে ক্রয় করেন। মধ্যস্বত্বভোগী অধিক মুনাফার সুযোগ পেয়ে থাকেন।
তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন স্থানে কৃষকরা যাতে সরাসরি তাদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করতে পারেন, এমন বাজার স্থাপন করা যায় তাহলে ভালো হয়। এসব বাজারে কৃষকদের নিকট থেকে কেবলমাত্র সাধারণ ভোক্তারাই পণ্য কিনতে পারবেন, কোনো ব্যবসায়ীরা নয়। এই ব্যবস্থা চালু করা গেলে একদিকে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য পাবেন, অন্যদিকে সাধারণ ভোক্তারা কম সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য কিনতে পারবেন।
Leave a Reply