1. admin@ritekrishi.com : ritekrishi :
  2. ritekrishi@gmail.com : ritekrishi01 :
রবি মৌসুম শুরুর পর চট্টগ্রামে ছয়টি শস্যবীজের দাম বাড়তি
রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০১:৩৪ পূর্বাহ্ন

রবি মৌসুম শুরুর পর চট্টগ্রামে ছয়টি শস্যবীজের দাম বাড়তি

  • আপডেটের সময় : সোমবার, ৪ নভেম্বর, ২০২৪
  • ১১৪ পড়া হয়েছে

কৃষি উদ্যোক্তা রেজাউল করিম এবারের রবি মৌসুমে প্রায় এক কানি জমিতে মরিচের চাষ করছেন। মরিচের হাইব্রিড জাতের এক কেজি বীজ তাঁকে কিনতে হয়েছে প্রায় আট হাজার টাকায়। মৌসুম শুরুর আগেও একই পরিমাণ বীজের দাম সাড়ে ৭ হাজার টাকা ছিল। ১৫ অক্টোবর থেকে মৌসুম শুরুর পর বীজের দাম বেড়ে গেছে।

ফটিকছড়ির বাসিন্দা রেজাউল করিম বলেন, রবি মৌসুমে তিনি মরিচ চাষ করছেন। বীজ কেনা, জমি তৈরি ও চাষাবাদ মিলিয়ে তাঁর ৬০ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। আশা করছেন লাখ দেড়েক টাকা উঠে আসবে। বীজের দাম বেশি পড়ায় এবার শীতকালীন সবজির দামের ওপরও প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন এই উদ্যোক্তা।
ফটিকছড়ির পাইন্দং ইউনিয়নের বাসিন্দা আকবর উদ্দিন অবশ্য হাইব্রিড বীজ কেনেননি। তিনি খুচরা দোকান থেকে পঞ্চগড়ের মরিচের বীজ কিনেছেন প্রতি কেজি ৭৫ টাকা দরে। মৌসুম শুরুর আগেও এই মরিচের দাম ছিল ৬০ থেকে ৬৫ টাকার ঘরে। আকবর বলেন, এক কানি জমিতে মরিচের চাষ করছেন। খুচরা বাজার থেকে পঞ্চগড়ের মরিচের বীজ কিনে জমিতে ছিটিয়েছেন।

শুধু এই দুজন নন, চট্টগ্রাম জেলার ১০ কৃষক ও খাতুনগঞ্জের পাইকারি ব্যবসায়ীরা বীজের বাড়তি দামের বিষয়টি জানিয়েছেন। মূলত পাইকারি ও খুচরা বাজারে ছয় ধরনের শস্যবীজে দাম বেড়েছে। এগুলো হলো মরিচ, শর্ষে, ধনিয়া, মাষকলাই, ফেলন ও মুগ। সপ্তাহের ব্যবধানে কোনোটি ৫ টাকা, কোনোটি ১০ টাকা বেড়েছে। আবার মৌসুম শুরুর আগে যে দাম ছিল, এখন তা ১০ থেকে ২০ টাকা বাড়তি।

সাধারণত বছরের ১৫ অক্টোবর থেকে ১৫ মার্চ পর্যন্ত রবি মৌসুম। এ মৌসুমে বোরো ধান, শীতকালীন সবজি, গম, ভুট্টাসহ বিভিন্ন তেল ও ডালজাতীয় ফসলের উৎপাদন হয়। চট্টগ্রাম জেলায় ১ লাখ ৫৭ হাজার ৩৫৮ হেক্টর জমিতে চাষ করেন কৃষকেরা। সরকারি ও বেসরকারি—দুভাবে বীজের বেচাকেনা হয়। সরকারিভাবে সব ধরনের দেশীয় বীজের দাম প্রতি কেজি ১৩০ টাকা। আর বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, স্থানীয় ব্যবসায়ী, বীজ উৎপাদকেরা একেক জাতের বীজ একেক দামে বিক্রি করেন।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) চট্টগ্রাম কার্যালয় জানিয়েছে, এবারের রবি মৌসুমে সরকারিভাবে ৩৩৫ টন বোরো, শর্ষে ও গমবীজের বরাদ্দ পাওয়া গেছে। পরিবেশক পর্যায়ে বোরোবীজের দাম প্রতি কেজি ৫০-৬২ টাকা, শর্ষেবীজ ১০৬ ও গমবীজের দাম ৫৯ টাকা। ১৪১ জন ডিলারের মাধ্যমে কৃষকেরা এই তিন প্রকারের বীজ কিনতে পারেন। তবে কৃষক পর্যায়ে দাম আরও ৫ টাকা করে বেশি।
পাইকারিতে সরবরাহ কম

গতকাল রোববার পাইকারি মোকাম খাতুনগঞ্জে শর্ষেবীজ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ১০১ দরে। এক সপ্তাহ আগেও এই বীজ বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকায়। ভারতীয় মরিচের বীজ প্রতি কেজি ১০ টাকা বেড়ে ২৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ধনিয়ার বীজ প্রতি কেজিতে ১৩ টাকা বেড়ে ২০৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে ডালজাতীয় শস্যের মধ্যে ফেলনের বীজ মৌসুম শুরু আগেও ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। এক সপ্তাহ আগে ছিল ৯০ থেকে ১০০ টাকা। এখন বিক্রি হচ্ছে ১৩৩ টাকা কেজি দরে। একইভাবে মাষকলাই ২৩ টাকা বেড়ে ১৫০ ও মুগ ২১ টাকা বেড়ে ১৪৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

খাতুনগঞ্জের মেসার্স নাজিম অ্যান্ড ব্রাদার্সের ব্যবস্থাপক অমল সাহা বলেন, বীজের সরবরাহ কম। আবার চট্টগ্রামের কয়েকটি উপজেলা, ফেনী, নোয়াখালীতে ভয়াবহ বন্যা হয়েছে। এ কারণে অনেক কৃষকের বীজভান্ডার নষ্ট হয়েছে। এ কারণে মৌসুম শুরুর পর দাম বেড়ে গেছে।

খাতুনগঞ্জের বীজ ব্যবসায়ীরা বলছেন, রবি মৌসুমে মাষকলাই, মুগ, খেসারি, ফেলন, মটর, সূর্যমুখী, মসুর, শর্ষেসহ বিভিন্ন শস্যবীজ বিক্রি হয়। পাশাপাশি মরিচের চাহিদাও তুঙ্গে থাকে। তবে এবার বন্যার কারণে জমি প্রস্তুত হতে দেরি হচ্ছে। এ কারণে বীজের বিক্রিও তুলনামূলক কম।
বন্যার প্রভাব রবি মৌসুমেও

গত আগস্টে পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিতে প্লাবিত হয়েছে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি, রাউজান ও হাটহাজারী, মিরসরাই, সীতাকুণ্ডের বিভিন্ন এলাকা। বন্যার পানিতে ডুবে যায় চাষি জমি, ঘরবাড়ি। ক্ষতিগ্রস্ত হন ১ লাখ ৬১ হাজার ৩১৭ কৃষক। এ ছাড়া চট্টগ্রামে ১ লাখ ৫৩ হাজার ১০৩ হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি হয়। মিরসরাই, সীতাকুণ্ড, ফটিকছড়ি, চন্দনাইশ, দোহাজারীর ১০ কৃষক জানান, এখনো অনেক জমি চাষযোগ্য হয়নি। কোনো কোনো জমি থেকে পানি সরেনি এখনো।

ফটিকছড়ির বাসিন্দা রেজাউল করিম বলেন, স্থানীয় ছড়ার পাড়ে তাঁর একখণ্ড জমি রয়েছে। কিন্তু পানি পুরোপুরি না নামায় ওই জমিতে এ বছর চাষ করতে পারছেন না।

দোহাজারীর কৃষক আবদুস সাত্তার দুই কানি জমিতে শীতকালীন নানা সবজি উৎপাদন করেন। শঙ্খ নদের পাড়ের তাঁর জমির অবস্থান। সাত্তার জানান, বন্যার পানিতে ডুবে গিয়েছিল জমি। পানি নামতেও সময় লেগেছে। এ কারণে দেরিতে মরিচের বীজ ফেলেছেন তিনি। আবার বীজ কিনতে হয়েছে বাড়তি দামে।

রবি মৌসুমে বন্যার প্রভাব পড়লেও লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হবে বলে ধারণা করছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) ওমর ফারুক। তিনি বলেন, এই মৌসুমে ৩৩ হাজার ১৫৫ হেক্টর জমিতে ৬ লাখ ৬৩ হাজার টন শীতকালীন সবজি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। লক্ষ্য অর্জনে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের চার ধাপে প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। প্রণোদনার মধ্যে রয়েছে ১০ ধরনের বীজ ও নগদ টাকা।

সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Error Problem Solved and footer edited { Trust Soft BD }
More News Of This Category
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত - রাইট কৃষি-২০২১-২০২৪
Web Design By Best Web BD