1. admin@ritekrishi.com : ritekrishi :
  2. ritekrishi@gmail.com : ritekrishi01 :
রঙিন মাছে সফলতার স্বপ্ন দেখছেন সাগর হোসেন
বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫, ১১:০৮ অপরাহ্ন

রঙিন মাছে সফলতার স্বপ্ন দেখছেন সাগর হোসেন

  • আপডেটের সময় : রবিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৫
  • ১০১ পড়া হয়েছে

পানিতে খাবার দিতেই ভাসছে, ডুব দিচ্ছে নানা রঙের মাছ। লাল, নীল, কমলা, কালো, বাদামি, হলুদ রঙের মাছের ছড়াছড়ি। গোল্ড ফিশ, কমেট, কই কার্ভ, ওরেন্টা গোল্ড, সিল্কি কই, মলি, গাপটি, অ্যাঞ্জেল প্রভৃতি বর্ণিল মাছ দেখলে চোখ জুড়ায়, মন ভরে যায়। বাসার অ্যাকুরিয়ামে শোভা পায় এ মাছ। এসব মাছ চাষ করছেন গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের রামজীবন ইউনিয়নের সরকারটারী গ্রামের তরুণ উদ্যোক্তা মো. সাগর হোসেন। রঙিন মাছের চাষ তার জীবন রাঙিয়ে দেবে বলে আশাবাদী তিনি। এ মাছের মাধ্যমে মাসে ৬০-৭০ হাজার টাকা আয় করছেন। তিনি রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জেন্ডার অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বিভাগে পড়াশোনা শেষ করেছেন।

সাগর হোসেন জানান, ২০১৯ সালে করোনায় হঠাৎ ক্যাম্পাস বন্ধ হয়ে গেলে বাড়িতে বসে অলস সময় কাটছিল। হঠাৎ ইউটিউবে চোখে পড়ে রঙিন মাছ চাষের ভিডিও। এ মাছের চাষ বাড়িতেও করা যায় কি না ভাবতে শুরু করেন। তারপর মাত্র তিন হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে কিছু ‘অটো ব্রিড’ মাছ দিয়ে শুরু করেন। ব্যবসা শুরুর পরই দেখা দেয় বড় সংকট। মাছগুলো কোথায় বিক্রি করবেন? স্থানীয় বাজারে এসব মাছ মানুষ কিনবে কি না? পরিচিত একজন সব শুনে মাছ কিনতে আগ্রহ দেখান।
সাগর বুঝতে পারেন, স্থানীয় বাজারেও এ মাছের চাহিদা আছে। একসময় বাজারে চাহিদা অনুযায়ী মাছ সরবরাহ করতে পারছিলেন না। তখন ঠিক করেন, ব্যবসার পরিধি বড় করবেন। কিন্তু তাতে সায় দেয়নি পরিবার। কেননা বড় পরিসরে ব্যবসা করতে গেলে বেশি লাভের সুযোগ যেমন থাকে; তেমনই থাকে বড় অঙ্কের লোকসানের শঙ্কা। সাগরের ছিল দৃঢ় মনোবল। পরিচিত এক আপুর কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা ধার নিয়ে ব্যবসা বড় করার উদ্যোগ নেন তিনি। কিছু কই কার্প ও কমেট মাছ এনে কোনো প্রশিক্ষণ ছাড়াই ইউটিউব দেখে দেখে রেণু উৎপাদন করে ফেলেন। ততদিনে পরিবারও সহযোগিতা করতে শুরু করে। ৪৫ শতাংশ পুকুরে মাছ চাষ শুরু করেন তিনি। এ পুকুরে উৎপাদিত মাছগুলো পাঁচ মাসে বিক্রি করেন। বড় অঙ্কের লাভের মুখ দেখেন সাগর।
সাগর হোসেন  বলেন, ‘বর্তমানে ২০-২৫ প্রজাতির রঙিন মাছ চাষ করছি। এতে ৪০-৫০ হাজার টাকা মাসে আয় করছি। আমাদের দেশে অ্যাকুরিয়ামে রঙিন মাছ ব্যাপক জনপ্রিয়। সৌখিন মানুষেরা বাসা-বাড়িতে সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য অ্যাকুরিয়ামে এমন মাছ রাখেন। শপিংমল, হোটেল, রেস্টুরেন্ট এমনকি দোকানেও অ্যাকুরিয়ামের ব্যবহার বেড়েছে। দিন যত যাচ্ছে ব্যবহারও তত বাড়ছে। ফলে দেশের টাকা দেশেই থাকছে। রঙিন মাছ চাষে সরকারিভাবে পৃষ্ঠপোষকতা পেলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করতে চাই।’
প্রথমদিকে সাগর হোসেনের রঙিন মাছ চাষ দেখে পরিবার ও স্থানীয়রা হাসি-ঠাট্টা করলেও বর্তমানে সফলতা দেখে খুশি অনেকেই। সেই সঙ্গে এমন রঙিন মাছ চাষ অন্য কোথাও দেখেননি তারা। সাগর হোসেনের বন্ধু মো. ওবাদুর রহমান বলেন, ‘রঙিন মাছ চাষে আমার বন্ধুর জীবনও রঙিন হয়েছে। তার সাফল্য অনেককেই পথ দেখাচ্ছে। চাকরির পেছনে না ছুটে বন্ধুর কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে আমিও রঙিন মাছ চাষ শুরু করবো।’

বর্তমানে সাগর ৩টি পুকুর ও ১৮টি হাউজ যুক্ত করে ১৫-২০ জাতের দেড় লাখ রঙিন মাছ উৎপাদন করছেন। এ ছাড়া তার রঙিন মাছ সাগর এগ্রো ফার্মসহ বেশ কয়েকটি অনলাইন প্লাটফর্মে বিক্রি করছেন। যার চাহিদা গাইবান্ধা ছাড়াও রংপুর, দিনাজপুর, বগুড়া, রাজশাহীসহ যাচ্ছে রাজধানী ঢাকা পর্যন্ত।

গাইবান্ধা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবদুর রাশেদ বলেন, ‘রঙিন মাছ চাষি এ উদ্যোক্তার প্রজেক্টে সার্বিক খোঁজ-খবর নেওয়ার পাশাপাশি সব ধরনের সহযোগিতা ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া লাভজনক বেশি হওয়ায় রঙিন মাছ চাষে অনেকের আগ্রহ তৈরি হচ্ছে।’

সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Error Problem Solved and footer edited { Trust Soft BD }
More News Of This Category
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত - রাইট কৃষি-২০২১-২০২৪
Web Design By Best Web BD