1. admin@ritekrishi.com : ritekrishi :
  2. ritekrishi@gmail.com : ritekrishi01 :
আধুনিক পাট বীজ উৎপাদন পদ্ধতি
বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৪:৪৪ পূর্বাহ্ন

আধুনিক পাট বীজ উৎপাদন পদ্ধতি

  • আপডেটের সময় : মঙ্গলবার, ২৬ আগস্ট, ২০২৫
  • ৪৫ পড়া হয়েছে

বাংলাদেশের কৃষিখাতে ‘সোনালি আঁশ’ পাটের গুরুত্ব ঐতিহাসিকভাবে গভীর। তবে পাট চাষে অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে মানসম্পন্ন বীজের সংকট। বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ৬-৭ হাজার মেট্রিক টন পাট বীজের দরকার হয়। পাট বীজের চাহিদার মাত্র ১০-১২ ভাগ অর্থাৎ প্রায় ১৩০০ টন সরকারিভাবে বিএডিসি সরবরাহ করে থাকে। বীজের চাহিদা পূরণে প্রতি বছর প্রায় ৪৫০০ টন থেকে ৫০০০ টন পাট বীজ বেসরকারিভাবে আমদানি করা হয়ে থাকে। এই প্রেক্ষাপটে নাবী পাট বীজ উৎপাদন একটি গুরুত্বর্পূণ আলোচনার বিষয় হয়ে উঠছে। এটি পাট বীজ উৎপাদনের ক্ষেত্রে আধুনিক পদ্ধতি হিসেবে পরিচিত।
মোটামুটিভাবে ৪টি পদ্ধতিতে নাবী পাট বীজ উৎপাদন করা যায়:

সরাসরি বীজ বপন পদ্ধতি

শ্রাবণ মাসের প্রথম (মধ্য জুলাই) থেকে ভাদ্র মাসের শেষ (মধ্য সেপ্টেম্বর) সময়ের মধ্যে পাট বীজ বপন করতে হয়। সারিতে বপন করলে প্রতি শতাংশ জমিতে ১০ গ্রাম বীজ অর্থাৎ প্রতি হেক্টরে ২.৫ কেজি এবং ছিটিয়ে বপন করলে প্রতি শতাংশ জমিতে ১৬ গ্রাম বীজ অর্থাৎ প্রতি হেক্টরে ৪ কেজি বীজ বপন করতে হবে।

কাণ্ড ও ডগা রোপণ পদ্ধতি

শ্রাবণ মাসে (মধ্য জুলাই) আঁশ ফসলের জমি থেকে সুস্থ ও সবল গাছ যেসব মাতৃগাছে ফুল ধরেনি কিন্তু কিছু দিনের মধ্যে ফুল আসবে; সেসব গাছের কাণ্ড ও ডগা নির্বাচন করতে হবে। গাছগুলো ধারালো চাকু বা ব্লেডের সাহায্যে তেরচা করে দৈর্ঘ ২০-২৫ সেন্টিমিটার বা ৮-১০ ইঞ্চি কেটে নিতে হবে। মেঘলা দিনে বা পড়ন্ত রোদে ডগা রোপণ করা উত্তম। ডগা বা কাণ্ড সারি করে রোপণ করতে হবে। সারি থেকে সারির দূরত্ব ৩০ সেন্টিমিটার বা ১ ফুট এবং ডগা থেকে ডগার দূরত্ব ১০ সেন্টিমিটার বা ৪ ইঞ্চি। প্রতিটি ডগার প্রায় ৫ সেন্টিমিটার বা ২ ইঞ্চি পরিমাণ অংশ ৪৫ ডিগ্রি কোণে অর্থাৎ তীর্যকভাবে মাটির নিচে পুতে দিতে হবে।

চারা রোপণ পদ্ধতি

শ্রাবণ মাসের মধ্যে বীজতলায় ৫০-১০০ গ্রাম বীজ বপন করতে হবে। বীজতলার চারার বয়স ২৫-৪০ দিন হলে চারাগুলো রোপণ উপযুক্ত হয়। শ্রাবণ মাসে বপনকৃত বীজ থেকে উৎপাদিত চারা ভাদ্র মাস থেকে আশ্বিনের মাঝামাঝি পর্যন্ত রোপণ করা যায়। বীজতলা থেকে চারা তুলে নিয়ে ছায়ায় রাখতে হবে। প্রতিটি চারার ডগার ২-৩ টি পাতা রেখে অন্য সব পাতার বোটা বাদে বাকি অংশ কাঁচি দিয়ে কেটে দিতে হবে। বীজতলা থেকে যেদিন চারা তোলা হবে; ওইদিনই মূল জমিতে চারা রোপণ করা ভালো। সারি থেকে সারির দূরুত্ব হবে ১ ফুট এবং চারা থেকে চারার দূরুত্ব প্রায় ৪ ইঞ্চি রাখতে হবে।

সাথী ফসল পদ্ধতি

স্বল্প ব্যয় ও কম সময়ে পাট বীজ উৎপাদন ‘নাবী পাট বীজ উৎপাদন’ পদ্ধতি, এই প্রযুক্তি যথেষ্ট টেকসই হলেও এর মূল সমস্যা জমির প্রাপ্যতা। পাট বীজ ভিত্তিক শস্যক্রম উপযোগী জমির পরিমাণ খুবই কম। তাই কৃষকরা নিজের পাট বীজের চাহিদা মেটানোর জন্য মরিচ, মুলা ও শীতকালীন সবজির সঙ্গে সাথী ফসল হিসেবে এবং শীতকালীন জমির চারধারে চারা রোপণ করে বীজ উৎপাদন করতে পারেন।

বীজ সংগ্রহের সময়

দেশি ও তোষা উভয় জাতের গাছের শতকরা ৫০ ভাগ ফল (তবে ফাল্গুনী তোষার ক্ষেত্রে শতকরা ৮০ ভাগ) বাদামি রং ধারণ করলে গাছের গোড়া সমেত কেটে ফসল সংগ্রহ করতে হবে।

বীজ সংরক্ষণ

বীজের আর্দ্রতা শতকরা ৯-এর নিচে থাকলে বীজ ভালো থাকে। আমাদের দেশে মূলত ক্ষুদ্র চাষির সংখ্যাই বেশি। তাদের বীজের পরিমাণও কম। সে জন্য টিনের কৌটা, প্লাস্টিকের ক্যান ইত্যাদি বায়ুরোধী পাত্রে বীজ সংরক্ষণ করতে পারেন।

নাবী বীজ উৎপাদনের মাধ্যমে কৃষকেরা মানসম্পন্ন বীজ প্রস্তুত করতে পারবেন, যা আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে জাতীয় পর্যায়ে বীজ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে। তবে এর জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত সরকারি সহায়তা, প্রশিক্ষণ ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন।

সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Error Problem Solved and footer edited { Trust Soft BD }
More News Of This Category
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত - রাইট কৃষি-২০২১-২০২৪
Web Design By Best Web BD