জেলায় বর্ষা মৌসুমে বাড়ির আঙ্গিনায় ও পতিত জমিতে বস্তায় আদা চাষ করে সফলতার স্বপ্ন দেখছে অনেকে।
বরিশাল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জেলার বানারীপাড়া, উজিরপুর ও আগৈলঝাড়াসহ বিভিন্ন উপজেলায় বাড়ির আঙ্গিনায় বস্তায় আদা চাষ করে সফলতা এনেছে একাধিক যুবক ও প্রান্তিক কৃষক। তাদের এ সফলতা দেখে বর্তমানে বাণিজ্যিক ভাবে জেলার অনেকেই এখন আগ্রহী হচ্ছেন এ পদ্ধতিতে আদা চাষ করতে। আগামী বছর বর্ষা মৌসুমে আরো বড় পরিসরে ও বাণিজ্যিক ভাবে সফলতা আনতে স্বপ্ন বুনছে তারা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র আরো জানায়, বস্তা প্রতি খরচ ৮০ টাকা। কিন্তু আয় প্রায় ৪০ টাকার বেশি। ফেলে দেয়া বিভিন্ন সাইজের ছোট বড় বস্তায় বিগত এপ্রিল মাসের শেষের দিকে লাগানো হয় আদার কন্ধ। চার মাসের মাথায় সে সব কন্ধ রূপ নিয়েছে ছোট ছোট ঝোপে। আর ঝোপের নিচ থেকে উঁকি দিচ্ছে আদার ফলন। মূলত ছায়া যুক্ত-শুকনো স্থানে ভালো জন্মায় আদা। তাই বসত বাড়ির আশ পাশে বিভিন্ন গাছ-গাছালির নিচের জমিতে চলছে চাষাবাদ। মাটি, সার ও বীজ মিলে প্রতি বস্তায় খরচ প্রায় ৮০ টাকা। এক একটি বস্তা থেকে দুই থেকে আড়াই কেজি আদা পাওয়ার আশা করছে কৃষকরা। যার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ৪০০ টাকা।
এ বিষয়ে জেলার সদর, বানারীপাড়া, উজিরপুর ও আগৈলঝাড়া উপজেলার প্রান্তিক কৃষক মো. সালাউদ্দিন, মো. মনোয়ার, জহিরুলসহ একাধিক যুবক বলেন, বস্তায় আদা চাষ খুব সহজ। এতে খরচও কম হয়। এ পদ্ধতিতে আদা চাষ খুব লাভ জনক। বস্তা, আদা, সার এবং পরিচর্যা মিলিয়ে বস্তা প্রতি খরচ হয় প্রায় ৮০ টাকা। প্রতিটি বস্তায় প্রায় দেড় থেকে দুই কেজি পর্যন্ত আদা পাওয়া যায়। প্রথম অবস্থায় স্বল্প পরিসরে চাষ করেছেন তারা। এ বছর যদি লাভ ভালো হয়, তাহলে আগামীতে আরও বড় পরিসরে আদা চাষ করবেন তারা।
প্রান্তিক কৃষক মো. সালাউদ্দিন ও মো. মনোয়ার আরো বলেন, এরইমধ্যে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বেশ কয়েক জন কৃষক এভাবে আদা চাষ শুরু করেছেন। বস্তায় আদা চাষ খুবই সহজ। অল্প খরচে বেশি লাভ জনক একটি ফসল।
এ ব্যপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (খামারবাড়ী)’র অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (উদ্ভিদ সংরক্ষণ) মোঃ রেজাউল হাসান জানান, এপ্রিল-মে মাসে আদা লাগাতে হয়। তবে এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহ আদা লাগানোর উপযুক্ত সময়।
বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনায় এসব কর্মসূচি পরিচালিত হচ্ছে । বস্তায় আদা লাগানোর পূর্বে প্রতি বস্তায় তৈরি মিশ্রন এমন ভাবে ভরাতে হবে যাতে বস্তার উপরের দিকে ১-২ ইঞ্চি ফাঁকা থাকে। প্রতি বস্তায় ৪৫-৫০ গ্রামের একটি বীজ মাটির ভিতরে ২ থেকে ৩ ইঞ্চি গভীরে লাগাতে হবে। বীজ লাগানোর পর মাটি দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। এবং তা সঠিক পরিচর্যা পেলে কৃষক প্রচুর লাভবান হবে। আমার প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে যেই প্রশিক্ষণ দিচ্ছি যা কৃষকরা প্রয়োগ করলে এ অঞ্চলের অর্থনীতিতে বেশ ভালো প্রভাব পড়বে বলে আশা করা যায়।
সূত্র :বাসস
Leave a Reply